ওসমানীনগর প্রতিনিধি:
সিলেটের ওসমানীনগরে প্রশাসনের নাকের ডগায় গয়নাঘাট-কালাসারা খালে একের এক নির্মাণ করা হচ্ছে কালভার্ট। এব্যাপারে অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি আবার নির্মাণ করা হচ্ছে বিশাল খালের মধ্যেখানে সুরু কালভার্ট। এতে পানি প্রবাহের গতি প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে এ এলাকার মানুষ অল্প বৃষ্টিতে বন্যার শিকার হবে। খালটি অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমী পানি থাকে না। যার ফলে কৃষি চাষে ব্যাঘাত ঘটছে। দাবী উঠেছে সকল অবৈধ কালভার্ট উচ্ছেদসহ খাল খননের।
জানা যায়, সিলেটের ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের কালাসারা হাওর থেকে প্রমত্তা রতœা নদীর শেষ চিহ্ন দাশপাড়া খাল হয়ে দয়ালং হাওরে পানি প্রবাহিত হয়। প্রায় দুই যুগ পূর্বেও এই খাল দিয়ে সব ধরনের নৌকা চলাচল করতে দেখা গেলেও এখন পানি চলাচলও করতে পারে না। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে খালের বিভিন্ন স্থানে বিরাট অংশ মাটি ভরাট করে সরু কালভার্ড নির্মাণের ফলে পানি প্রবাহের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এখনো এধরণের সরু কালভার্ড নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। এমন অবস্থায় একদিকে হুমকীর মুখে পড়েছে এলাকার কৃষি ব্যবস্থা অন্যদিকে তৈরি হয়েছে বন্যার ঝুঁকি। এসব সরু কালভার্ড উচ্ছেদ করে খালের প্রশস্থা অনুযায়ি কালভার্ড নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
কালাসারা হাওর থেকে দাশপাড়া হয়ে দয়ালং হাওরের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী খালের কালাসারা হাওর অংশে প্রায় ১কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কাছে খালটি ভরাট হয়ে গেলে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে ২০২৫ সালে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়। কিন্তু কিছু ব্যক্তি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে খনন করা খালের বিভিন্ন স্থান ভরাট করে খালের প্রশস্থতা কমিয়ে সরু কালভার্ড নির্মাণের ফলে পানি প্রবাহের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া পথে। সম্প্রতি ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের ফলে খালের দুই পাশের জায়গার কদর বেড়ে যাওয়ায় সরু কালভার্ড নির্মাণের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। গত প্রায় এক যুগে খালের উপর অন্তত ৬টি সরু কালভার্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এখনো কালভার্ড নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে দাসপাড়া খালে একটি কালভার্ড নির্মানের খবর পেয়ে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালটি পরিদর্শন করেছেন। এলাকাবাসীর দাাবি সরু কালভার্ড না করে খালের প্রশস্থা অনুযায়ি কালভার্ড নির্মাণ করলে পানি প্রবাহে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতো না । বর্ষাকালে এ খাল দিয়ে পূর্বাঞ্চলের পানি প্রবাহিত হয়। বর্তমানে খাল অবৈধভাবে দখল ও সুরু কালভার্ট নির্মান করার কারণে সে পানি আর সন্বাভাবিক গতিতে চলাচল করতে পারছে না। যার ফলে এ অঞ্চলের মানুষ প্রতি বচর অকাল বন্যার ও জলাবদ্ধতার শিকার হন।
শুধু এই খাল নয়, উপজেলার সর্বত্র এমন অবস্থা বিরাজ করছে। দখল ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে খাল-বিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বর্ষায় জলাবদ্ধতা এবং গ্রীষ্মে পানির অভাবে প্রতিবছর অনেক জমি পতিত পড়ে থাকছে। খালগুলো দখলমুক্ত করে খননের মাধ্যমে সচল করা গেলে কৃষির উৎপাদন দ্বিগুন করা সম্ভব ছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
হস্তিদুর গ্রামের তুতিউর রহমান চৌধুরী তোতা মিয়া বলেন, এব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েও লাভ হয়নি। খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে এখানে বন্যা দীর্ঘ মেয়াদি হয়ে থাকে। কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে খালের প্রশস্থতা অনুযায়ি কালভার্ডগুলো নির্মাণ করা প্রয়োজন ছিল।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (সেচ, উইং) সিলেটের বিভাগীয় সহকারি প্রকৌশলী রুবায়তে ফয়সাল মোঃ হাবিবুর রহমান, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এব্যাপারে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি কিছুদিন পূর্বে সম্প্রতি এই উপজেলায় যোগদান করেছি। খালের একটি কালভার্ড নির্মাণের খবর পেয়ে পরিদর্শন পূর্বক কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড