শৈলকুপা প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির তিন চরমপন্থীকে গুলি করে হত্যা করেছে জাসদ গনবাহিনী।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে শৈলকুপার রামচন্দ্রপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের মধ্যে হানিফ ও লিটন নামের দুইজনের পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। তারা পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা বলে জানা গেছে।
নিহত হানিফ (৫২) হরিনাকুন্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের রাহাজ উদ্দিনের ছেলে ও লিটন (৩৫) শ্রীরামপুর গ্রামের উম্বাদ আলীর ছেলে। বাকি একজনের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান জানান, বুকে ও মাথায় গুলি করে ওই তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ কাজ করছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
এদিকে পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির ৩ চরমপন্থিকে গুলি করে হত্যার দায় জাসদ গণবাহিনী স্বীকার করেছে বলে জানা গেছে।ঝিনাইদহে কায়েতপাড়া বাওড় নিয়ে এই খুন বলে জানা যাচ্ছে
২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর একই স্থানে ৫জনকে হত্যা করা হয়। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, নিহত চরমপন্থি নেতা হানিফ মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী ছিলেন। হরিণাকুন্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান হত্যা মামলায় তার ফাঁসি আদেশ হয়। উচ্চ আদালতেও ফাঁসির রায় বহাল থাকলে হাসিনা সরকারের সময় প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের বিশেষ ক্ষমা নিয়ে হানেফ এলাকায় ফিরে আসেন এবং মৎস্যজীবী লীগের উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি নিযুক্ত হন।
আ’লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তার করেন। হাসিনা সরকারের পতন হলে দুধর্ষ হানেফ বিএনপির ছত্রছায়ায় ফিরে আসার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, এই ট্রিপল মার্ডারের নেপথ্যে রয়েছে আলমডাঙ্গার কায়েতপাড়ার বিশাল বাওড়। ওই বাওড়ে কোটি টাকার উপরে মাছ ছাড়া আছে। সম্প্রতি মৎস্যজীবী লীগ নেতা পরিচয়ে হানেফ বাওড়ে মাছ ধরা ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে এলাকার বিবাদমান একাধিক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
সেই সুত্র ধরেই হানেফসহ তার দুই সঙ্গীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। কায়েতপাড়া বাওড় নিয়ে গত ৩০ বছরে অর্ধশত মানুষ খুন হয়েছে। হত্যার ধরণ দেখে বোঝা যায় তাদের কৌশলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হরিণাকুন্ডুর সাধরণ মানুষের ভাষ্যমতে সন্ত্রাসী হানেফ কুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান, তিওরবিলা গ্রামের লুৎফর রহমান, তাহেরহুদার আব্দুল কাদের ও পোলতাডাঙ্গার ইজাল মাষ্টারসহ শাতাধীক মানুষকে গুলি ও গলাকেটে হত্যা করে। এরমধ্যে ইজাল মাষ্টারকে হত্যার পর তার মাথা কেটে উঠানে ফুটবল খেলে। সে সময় বিষয়টি দেশে ব্যবপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এদিকে হত্যার দায় স্বীকার করে জাসদ গণবাহিনীর জনৈক কালু পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ম্যাসেজ পাঠানো হয়। হোয়াটসআপ বার্তায় দাবী করা হয়
এদিকে দীর্ঘদিন পর চরমপন্থিদের গুলির লড়াই ও গনমাধ্যমকর্মীদের কাছে তার দায় স্বীকার করে বিবৃতি প্রদান জনমনে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, একই স্থানে ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর শৈলকুপার শেখপাড়া গ্রামের শহীদ খা, ত্রিবেনী গ্রামের শাহনেওয়াজ, একই গ্রামের ফারুক, নুরু কানা ও কুষ্টিয়ার ভবানীপুর গ্রামে কটাকে গুলি ও জবাই করে হত্যা সন্ত্রাসীরা। এই মামলায় ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর কুষ্টিয়র আলী রেজা ওরফে কালু ও কুষ্টিয়া জেলার পিয়ারপুর গ্রামের মহসিন আলীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। ঝিনাইদহ জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোঃ জাকারীয়াহ এই রায় প্রদান করেন।
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড