আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ক্ষমতায় বসেই বিদেশে প্রায় সব রকমের সহায়তা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তাতে বিভিন্ন বৈশ্বিক কর্মসূচির কোটি কোটি ডলারের তহবিল পড়েছে হুমকির মুখে।
ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান বৈদেশিক সহায়তাগুলো পর্যালোচনা করার পর সেগুলো চালিয়ে নেওয়া বা একেবারে স্থগিতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। ফলে সহায়তা বন্ধের ঘোষণায় বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে এখন চলছে আলোচনা। বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার পরিমাণ তুলে ধরে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে কোন দেশ বা সংস্থাগুলো বেশি ভুগতে পারে, সেই চিত্র তুলে ধরেছে আলজাজিরা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, ২০২৩ সালে ওয়াশিংটন ৭ হাজার ২০০ কোটি (৭২ বিলিয়ন) ডলার বিদেশে সহায়তা দিয়েছে। ফলে ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্ত দেশগুলোর জন্য বড় ধাক্কা। দুর্ভিক্ষপীড়িত, যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে জরুরি খাদ্য সহায়তাসহ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েল ও মিশরে সামরিক সহায়তাও হুমকিতে পড়তে পারে।
কাকে কতটুকু দেয় যুক্তরাষ্ট্র : বিশ্বে একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সবথেকে বড় দাতাদেশ। ২০২৩ সালে দেশটি থেকে সবথেকে বেশি সহায়তা পেয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত ইউক্রেইন।
সে বছর ইউক্রেইন যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ১ হাজার ৬৬২ কোটি ডলার পেয়েছে। এর মধ্যে অর্থনৈতিক সহায়তা ১ হাজার ৬৪৮ কোটি ডলার ও সামরিক সহায়তা ১৪ কোটি ডলার।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইসরায়েল। দেশটি মোট ৩৩১ কোটি ডলার সহায়তা পেয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১ কোটি অর্থনৈতিক সহায়তা বাদে পুরোটাই সামরিক সহায়তা।
এরপর ইথিওপিয়া ১৭৭ কোটি ডলার অর্থনৈতিক সহায়তা পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। জর্ডানকে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র মোট ১৭২ কোটি ডলার দিয়েছে। এর মধ্যে ১২৯ কোটি ডলার অর্থনৈতিক সহায়তা ও সামরিক সহায়তা ৪৩ কোটি ডলার।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা মিশর সবমিলিয়ে পেয়েছে ১৪৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে অর্থনৈতিক সহায়তা ২২ কোটি ডলার ও সামরিক সহায়তা পেয়েছে ১২২ কোটি ডলার।
যুক্তরাষ্ট্র ওই বছর আফগানিস্তানকে অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়েছে ১২৭ কোটি ডলার। সোমালিয়াকে অর্থনৈতিক সহায়তা হিসেবে ১০৮ কোটি ডলার ও সামরিক সহায়তা হিসেবে ১৩ কোটি ডলার। ইয়েমেন অর্থনৈতিক সহায়তা পেয়েছে ৮৩ কোটি ডলার।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তার তালিকার ২০ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। ওই বছর দেশটি বাংলাদেশকে দিয়েছে ৫৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৫১ কোটি ডলার অর্থনৈতিক সহায়তা আর ৪ কোটি ডলার দিয়েছে সামরিক সহায়তা হিসেবে।
সামরিক সহায়তা পাওয়ার দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মিশর। ১৯৭৮ সালে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র মিশরকে ১২০ কোটি সামরিক সহায়তা দিয়েছে। ওই চুক্তির পর থেকে মিশর অর্থনৈতিক সহায়তাও পেয়ে আসছে।
যে কর্মসূচিতে প্রভাব বেশি পড়বে : সহায়তা বন্ধের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেন্ট’স ইমারজেন্সি প্ল্যান ফর এইডস রিলিফ’ (পিইপিএফএআর) কর্মসূচিতে প্রভাব পড়তে পারে।
২০০৩ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের হাত ধরে বিশ্বের সবথেকে বড় এই স্বাস্থ্য কর্মসূচি চালুর পর থেকে এটি ১২ হাজার কোটি ডলার গ্রহণ করেছে সরকারের কাছ থেকে।
পিইপিএফএআর মনে করে বিশ্বজুড়ে ৫০টি দেশে তারা আড়াই কোটি মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে, যার মধ্যে ৫০ লাখের বেশি শিশু।
এই কর্মসূচিতেও সহায়তা স্থগিতের সমালোচনা করে ‘ফাউন্ডেশন ফর এইডস রিসার্চ’ বলছে, এর ফলে লাখো মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে এইচআইভি চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবে।
ঘানা, মোজাম্বিক ও দক্ষিণ আফ্রিকায় এইচআইভি ও যক্ষ্মা নিয়ে কাজ করা ‘অলাভজনক’ অরাম ইনস্টিটিউট কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। অরাম ইনস্টিটিউটও যুক্তরাষ্ট্র থেকে তহবিল নিয়ে কাজ করে।
সহায়তা বন্ধের ধাক্কা পড়েছে বাংলাদেশেও। তবে রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে বলে তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
মোঃ কামরুজ্জামান মিলন
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক তুহিন প্রিন্টিং প্রেস ফকিরাপুল ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ই-মেইল: 𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
ই-পেপার: 𝐞𝐩𝐚𝐩𝐞𝐫.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট: 𝐰𝐰𝐰.𝐝𝐚𝐢𝐧𝐢𝐤𝐚𝐥𝐨𝐤𝐢𝐭𝐨𝐧𝐞𝐰𝐬.𝐜𝐨𝐦
মোবাইল: ০১৯২৭-৩০২৮৫২/০১৭৫০-৬৬৭৬৫৪
আলোকিত মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড